আমার কথা একটু লম্বা হবে। ইচ্ছে করেই লম্বা কথা বলব যেন এই লেখা পড়ার পর আমাকে কারো কিছু জিজ্ঞাসা করার না থাকে। বরং নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন।
প্রথম এবং সবচেয়ে বড় গুণ হল মাইলেজ। আমার গাড়ির মাইলেজের কথা শুনে অনেকেই হাসাহাসি করতে পারে কারণ আসলেই খুবই এবনরমাল এবং অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার। আমি একবার দুইবার না বরং অনেক অনেকবার মেপেছি এবং প্রথম প্রথম আমার নিজেরই বিশ্বাস হতো না। ভাবতাম হয়তো কোথাও কোন ভুল হচ্ছে। তাই আবার মাপতাম... আবার মাপতাম। প্রথমে পদ্ধতি ছিল ট্যাংক ফুল করে রিজার্ভে নিতাম আবার ফুল করতাম। এরপর পদ্ধতি ছিল এক লিটার করে নিয়ে রিজার্ভে নিয়ে আবার এক লিটার। এভাবে করে যতবার গ্রামের বাড়িতে যেতাম ততবার মাপতাম। যতবার লং ট্যুর দিয়েছি ততবারই মেপেছি। এখনো যদি বাড়িতে বাইক নিয়ে যাই তাহলে ইচ্ছে করেই এক লিটার এক লিটার করে তেল নেই এবং মাপি। কারণ ভালো লাগে ব্যাপারটা এবং চেক করি যে পারফরম্যান্স আগের মতো আছে কিনা। আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ ৭০-৭১ কিলোমিটার পার লিটার। যার যেভাবে ইচ্ছা যতবার ইচ্ছা পরীক্ষা করে নিবেন।
এই এবনরমাল মাইলেজ সম্পর্কে আমি শোরুমে কথা বলেছিলাম। তারা বললো যে এটা আপনার ভাগ্য। হাজারে একটা এমন গাড়ি দুয়েকটা পাওয়া যায়। তারা শুধু এই পরামর্শটা দিল যে, ভাই গাড়ির কার্বুরেটরে কাউকে হাত দিতে দিবেন না। যে সেটিং এ আছে সেভাবেই রাখবেন। অনেকে আপনাকে ভুজুংভাজুং বুঝিয়ে কাজ করতে চাইবে কিন্তু আপনি করবেন না। তবে আরেকটা কথা উনারা বললো, ড্রাইভিং স্টাইল এবং তেলের কোয়ালিটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ড্রাইভিং স্টাইলঃ
২০০৬ থেকে আমি বাইক চালাই। বিভিন্ন ব্রান্ডের বাইক চালানো হয়েছে। আমার বাবাও যেহেতু ১৯৭৭ সাল থেকে বাইকার তাই আমার হাত পাকা হওয়া সহজ হয়েছে। আমার বাবাই আমার হাতে বাইক তুলে দিয়েছেন এসএসসি পরীক্ষার পরপরই। নিজের হাতে আমাকে শিখিয়ে আমার হাতে বাইক তুলে দিয়েছেন। এক হিসেবে জন্মলগ্ন থেকেই বাইকের সাথে সম্পর্ক যেহেতু বাবা আমাকে টাংকির উপরে নিয়ে চালাতেন।
তেলের কোয়ালিটিঃ
আর আমি কখনো যেনোতেনো পাম্প থেকে কখনও তেল নেই না। পদ্মার ডিলার ছাড়া অন্য পাম্প থেকে একান্ত বিপদে না পড়লে নেইনা। বড়জোর মেঘনা। যমুনা থেকে মরে গেলেও নেই না। হয়তো হাতে গোনা দুয়েকবার নিয়েছি একান্ত বিপদে পড়ে। পরীবাগ, আসাদগেট, ট্রাস্ট, এসপি, ক্লিন ইত্যাদি এই গুলো থেকে তেল নেই যত কষ্টই হোক। কারণ যতনে রতন মেলে। যার প্রমাণ আমার বাইক।
এক হাতে চালানোঃ
বাইকের যত্নের ব্যাপারে আমি এতটাই কঠিন যে অন্যান্যদের কথা বাদ, আমার আপন দুলাভাই যখন বাইক চেয়েছে তখন আমি বিনয়ের সাথে বলে দিয়েছি যে, ভাইয়া আপনি যদি ইন্ডিয়াও যেতে চান তা-ও আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমি নিয়ে যাব। আপনাকে দিব না।
তবে তিনজন ব্যাক্তি আমার এই মাস্টার পিস চালাতে পেরেছে। যেদিন বাইকটা কিনেছিলাম সেদিন আমার সাথে আমার খালাতো ভাই গিয়েছিলেন শোরুমে। উত্তরা জসীমউদ্দিন শোরুম থেকে নিয়েছিলাম এটা। কেনা শেষে শোরুম থেকে বাসা পর্যন্ত খালাতো ভাই চালিয়ে এনেছিলেন। এরপর আরেকদিন উনি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। সেদিনও একবার চালিয়েছিলেন
আমার এক বন্ধু একদিন চালিয়েছে ২০০-৩০০ মিটার। আরেকদিন চালিয়েছিলো ১-২ কিলোমিটার।
আমার ছোট বোনের হাসবেন্ড চালিয়েছিলো দুই দিন।
কাকতালীয় ভাবে এই তিনজন ব্যাক্তির প্রত্যেকেই দুই দিন করে চালিয়েছে।
এত যত্নের গাড়ি আমি যাদেরকে দিয়েছি তারা আমার কতোটা আস্থাভাজন সেটা বুঝতেই পারছেন।
এক্সিডেন্ট হিস্ট্রিঃ
বাইক চালাবে আর এক্সিডেন্ট হবেনা এটা আসলে পসিবল না। ছোট হোক আর বড় হোক হবেই। তবে আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ খুবই কাকতালীয়ভাবে এই বাইক কেনার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন এক্সিডেন্ট আমার হয়নি। আগের দুই বাইকে দুইটা বড়সড় এক্সিডেন্ট হয়েছিল যদিও বাইক কিংবা আমার কারোরই তেমন কোন বড় ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এক্সিডেন্ট হয়েছিল বড়সড় ভাবে। একবার কুকুরের সাথে (খুব কমন) আরেকবার পিচ্ছিল রাস্তায় ২০০৬ সালে ( বাইক চালানো শেখার পরে নতুন অবস্থায়)
হয়তো আগের দুই এক্সিডেন্ট এর কারণে এখন অনেক বেশি সতর্ক থাকি যে কারণে এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ নিজেও সেফ, বাইকও সেফ।
দামঃ
আপনি যদি শোরুম থেকে নতুন বাইক কেনেন তাহলে দাম তো জানেনই। দুই লাখ চল্লিশ এবং কাগজ পত্র ইত্যাদি আনুষঙ্গিক মিলে দুই লাখ পঞ্চান্ন বা ষাট। অথচ ওই গাড়িতে আপনি মাইলেজ চল্লিশ পাবেন নাকি পঞ্চাশ নাকি পয়ত্রিশ তার কোন গ্যারান্টি নেই। আর একবার শোরুম থেকে বের করা হয়ে গেলে এটা আর ফেরত দেবার সুযোগ নেই যতই আপনি বলেন যে ভাই এটার মাইলেজ খারাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। ওরা আপনাকে ভুজুংভাজুং বুঝিয়ে দিবে যে ভাই ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হলে ঠিক হয়ে যাবে কিংবা বলবে রাইডিং স্টাইল কিংবা তেলের কোয়ালিটি ইত্যাদি ইত্যাদি হাবিজাবি। কিন্তু আমার গাড়িটার মাইলেজ পরীক্ষিতভাবে ৭০। এবং আপনি যতবার ইচ্ছা পরীক্ষা করে নিবেন। যে ফ্যাসিলিটি শোরুমে নতুন গাড়িতে পাবেন না। তাই দাম একটু বেশি চাইব। দয়া করে কেউ কষ্ট নিবেন না মনে। কারণ আমার বিশ্বাস যে, এই দামটা আমি ডিজার্ভ করি। দুই লাখ পনের হাজার।
আরেকটা সুবিধা হল, ৫০০০ টাকা দিয়ে ট্যাসলক লাগিয়েছি।
- কখনই ব্যাংকিং কার্ড এর তথ্য কিংবা ওটিপি শেয়ার করবেন না , পেমেন্ট করার পূর্বে সবসময় পণ্যটি যাচাই করে নিন। Bikroy ডেলিভারি সার্ভিস প্রোভাইড করে না। সর্বদা সতর্ক থাকুন।
- কখনই ব্যাংকিং কার্ড এর তথ্য কিংবা ওটিপি শেয়ার করবেন না , পেমেন্ট করার পূর্বে সবসময় পণ্যটি যাচাই করে নিন। Bikroy ডেলিভারি সার্ভিস প্রোভাইড করে না। সর্বদা সতর্ক থাকুন।